১৫০ সিসি মোটরসাইকেলে এখন ইয়ামাহাই মার্কেট লিডার
এসিআই মোটরস লিমিটেড-এর নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস বলেছেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম এখন উন্নত প্রযুক্তির মানসম্পন্ন মোটরসাইকেলের দিকে ঝুঁকছে। নিরাপদ চলাচলের জন্য এটি জরুরি। গত তিন মাসের সেলস রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫০ সিসি মোটরসাইকেলে দেশের বাজারে ইয়ামাহা মার্কেট লিডার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অটোমাবাইল শিল্পে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান এসিআই মোটরসের অবদান নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ এসিআই (অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লি.) ভোগ্যপণ্য, সুপারশপ, ওষুধ, সার, কীটনাশক, কৃষিপণ্য, খাদ্যপণ্য, পোলট্রি ফিডের পাশাপাশি অটোমোবাইল শিল্পেও সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে যাচ্ছে।
ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা করলেও বর্তমানে ২৫টি কোম্পানি মিলে একটি বৃহৎ শিল্প গ্রুপ গড়ে তুলেছে। পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি মনোযোগ দিয়েছে পণ্য সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণে। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির বাজারে প্রতিষ্ঠানটির অংশীদারি ৫০ শতাংশের বেশি। বাণিজ্যিক যান, মোটরসাইকেল ইত্যাদি খাতেও ব্যবসা রয়েছে এসিআইয়ের। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চীনের ফোটন ব্র্যান্ডের গাড়ি দেশের বাজারে সরবরাহ করছে এসিআই মোটরস। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড জাপানের ইয়ামাহা মোটরসাইকেল বাংলাদেশে বাজারজাত করে লাখো তরুণের মন জয় করেছে।
আলোচনায় এসব প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। দেশের তরুণদের পছন্দের বাইক সম্পর্কে এসিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা এখন কম দামি বাইকের চেয়ে বরং প্রযুক্তি ও মানসম্পন্ন মোটরসাইকেলের দিকে ঝুঁকছে। তাই আমরা জাপানিজ কোম্পানি ইয়ামাহার উচ্চ প্রযুক্তির ও সেরা মানের মোটরসাইকেল এ দেশের তরুণদের সামনে নিয়ে এসেছি।
তিনি বলেন, মোটরসাইকেলের একটা বড় অংশ ১০০ সিসি ও ১২৫ সিসি সেগমেন্টের। তবে এখনকার তরুণরা ১৫০ সিসির বাইক বেশি পছন্দ করছে। এখানে গত তিন মাসের হিসাবে মার্কেট লিডারশিপ ইয়ামাহার দখলে। বাংলাদেশের মোট মোটরসাইকেলের ১৫ শতাংশ ইয়ামাহার দখলে। এর মধ্যে ১৫০ সিসিতে ৩১ শতাংশ মার্কেট শেয়ার আমাদের।
বর্তমানে বাইকারদের জন্য এফজেডএস ভিটু, এফজেডএস ভিথ্রি, আর ফিফটিন ভিথ্রি, আর ফিফটিন ভিফোর, এমটি ফিফটিন, এমটি ফিফটিন ভিটু, এফজেডএক্স ও বিগিনারদের জন্য ১১০ সিসি স্কুটার ‘স্ট্রিট র্যালি’ এবং ১২৫ সিসি শ্রেণিতে সবচেয়ে সেরা ‘স্যালুটো’ বাজারজাত করছে এসিআই মোটরস।
সুব্রত রঞ্জন বলেন, দেশে আমরাই প্রথম ফুয়েল ইনজেকশন প্রযুক্তির মোটরসাইকেল শুরু করি।
এর সুফল হলো, এটি জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব। পাশাপাশি এর পারফরম্যান্স অনেক ভালো। বাংলাদেশের রাস্তায় ব্রেক কষা ও ভারসাম্য রক্ষার বিষয়টি খুবই জরুরি। ইয়ামাহা এ দুই দিক দিয়ে অত্যন্ত ভালো। আমরাই প্রথম এবিএস প্রযুক্তির বাইক দেশের বাজারে নিয়ে এসেছি।
বিক্রয়োত্তর সেবায়ও তারা এগিয়ে আছেন উল্লেখ করে এসিআই মোটরসের এই কর্মকর্তা বলেন, ইয়ামাহা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর বাইকারদের সঙ্গে সংযোগ তৈরিতে আমরা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছি। সারা দেশে ১১০টি থ্রি এস (সেলস, সার্ভিস, স্পেয়ার পার্টস) সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। আমরা ৩০ মিনিটের মধ্যে মেরামত সেবা দিই। এর মানে হলো আমাদের সার্ভিসিং সেন্টারে গেলে ৩০ মিনিটের মধ্যে কেউ না কেউ আপনার মোটরসাইকেল সার্ভিসিংয়ের কাজ শুরু করবে। প্রতিটি সার্ভিসিং সেন্টারে ওয়াইডিটি (ইয়ামাহা ডায়াগনস্টিক টুলস)-এর মাধ্যমে মোটরসাইকেলের সমস্যা চিহ্নিত করে মেরামত সেবা দিয়ে থাকি।
বাংলাদেশে বাণিজ্যিক গাড়ি বা কমার্শিয়াল ভেহিক্যালের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, কমার্শিয়াল ভেহিক্যাল দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একই সঙ্গে নির্মাণ ও শিল্প খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, ফোটন বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত বাণিজ্যিক গাড়ির ব্র্যান্ড, যা বিশ্বব্যাপী ১০০-এর বেশি দেশে উপস্থিতিসহ ১ কোটির বেশি বাণিজ্যিক যানবাহন বিক্রি করছে। উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন পিকআপ ও সেরা বিক্রয়োত্তর সেবার জন্য দেশে ২ হাজারের বেশি গ্রাহক ফোটন ব্র্যান্ডের গাড়ি বেছে নিয়েছেন।
দেশের উপযোগী বাণিজ্যিক যান সরবরাহের বিষয়ে এসিআই মোটরসের নির্বাহী পরিচালক জানান, বর্তমানে মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্যোক্তারাই ফোটন গাড়ির প্রধান গ্রাহক। এসিআই প্রধানত এক থেকে দেড় টনের বাণিজ্যিক গাড়ি বাজারজাত করে। ভবিষ্যতে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন মডেলের গাড়ি বাজারজাতকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রযুক্তির দিকেও নজর রাখছি আমরা।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।